বিনা পয়সায় খাবার
রাস্তায় ছিন্নমূল বাস্তুহারা মানুষের এক বেলার খাবারের নিশ্চয়তা নেই। এই শহরে পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ানো মানুষের সংখ্যা অগণিত। এই মানুষগুলো প্রতিদিন তীর্থের কাকের মতো চেয়ে থাকে আমার আপনার একটু সাহায্যের আশায় যা দিয়ে তারা তাদের ক্ষুধা নিবৃত্তি করবে। এমন ভবঘুরে ও রাস্তার ছিন্নমূল এই মানুষ গুলোর পাশে দাড়ানোর জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করছে জুম বাংলাদেশ।
পেটে ক্ষুধা থাকলে পড়াশোনায় মন বসে না কোনো শিক্ষার্থীর। শিশুদের পড়াশোনায় আগ্রহ ধরে রাখতে ও তাদের উপর প্রতিদিনের খাবার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিতে জুম বাংলাদেশ এই শিশুদের ক্লাস শেষে প্রতিদিন এক বেলা পুষ্টিকর খাবার দিয়ে থাকে ।
খোলা আকাশের নিচে থাকা বেশিরভাগ পথশিশুরাই ক্ষুধার্ত থাকে।
ক্ষুধার যন্ত্রণায় তারা এই শহরের অলি গলিতে ছুটে বেড়ায় একটুকু খাবার প্রাপ্তির আশায় । এদের কেউ আবার খাবার জোগার করতে পথে পথে ফুল, চকলেট ও পানি বিক্রি করে। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করা অনেক শিশুরাই নেশায় আসক্ত হয়ে পরে, কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায় ক্ষুধার যন্ত্রনাকে কমাতেই তারা এই নেশা করে। জুম বাংলাদেশ টিম নেশাগ্রস্থ শিশুদের নিকট মাদকাসক্তির কারণ জানতে চাইলে তারা জানায়, “৩ বেলা খাওন জোগাড় করতে আমাগো ১৫০ টাহার কাম করন লাগে কিন্তু হারাদিন মাইনসের কাছে হাত পাতলে পাই ৩০ বা ৪০ টাকা যা দিয়ে ৩ বেলা খাওন ত দুরের কথা এক বেলাই ঠিকমতো খাইবার পারি না। আর তাই এই কষ্ট থেইক্কা বাচতে ২০ টাকা দিয়া আঠা কিননা নেশা করি এটা খাইলে আর আমাগো সারাদিন কিছু খাওন লাগে না, ক্ষিধাও লাগে না”
সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুদের নেশার মতো অন্ধকারের জগতে চলে যাওয়ার পিছনে মূল কারণ হিসেবে থাকে শিশুদের খাবার নিশ্চয়তা না থাকা।
আমরা সে শিশুদের নেশার জগত থেকে ফিরিয়ে আনতে “বিনা পয়সায় খাবার” নামে প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। যার মাধ্যমে প্রতিদিন ঢাকার ২ শতাধিক শিশু ও ছিন্নমূল মানুষদের বিনামূল্যে এক বেলার খাবার তুলে দেওয়া হয় । প্রতিদিন এক বেলার এই খাবারের নিশ্চয়তা শিশুদের এই অন্ধকারের জগত থেকে কিছুটা হলেও বের করে আনতে পারবো বলে বিশ্বাস করে জুম বাংলাদেশ টিম।