জুম বাংলাদেশ স্কুলের সাথে রবিউলের পথচলা ২০১৬ সাল থেকে। জুম বাংলাদেশ স্কুল শুরুর দিন যে ১৩ জন বাচ্চাদের নিয়ে আমরা প্রথম শুরু করেছিলাম তাদের মধ্যে একজন রবিউল।
ছোট্ট রবিউল কখনো ভাবতে পারেনি সে স্কুলে যেতে পারবে, পড়াশোনা করতে পারবে। রবিউলের মা মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে অতি কষ্টে সংসার চালাতো। রবিউল যখন ছোট ছিল; তখন তার বাবা আরেকটা বিয়ে করে তাদের ছেড়ে চলে গেছে। তখন থেকে শুরু হয় বেঁচে থাকার সংগ্রাম। সারাদিন রাস্তার ধারে ঘুরে বেড়ানো। কখনো বা চায়ের দোকানের একটু আধটু কাজ করেই চলছিলো রবিউলের জীবন। আর এভাবেই অভাবের সংসারে বড় হতে থাকে রবিঊল ও তার বড় বোন।
তার বড় বোন অবশ্য বেশীদূর লেখাপড়া করতে পারেনি। অভাবের কারণে মায়ের সাথে বাসাবাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে হয়েছে। রবিউল এর স্বপ্ন ছিলো বড় হয়ে পুলিশ হবার, কিন্তু অভাবের সংসারে পড়াশুনাটা তার নিকট অনেকটা রুপকথার গল্পের মতো ছিলো।
চায়ের দোকানে কাজ করার সময় রবিউল যখন দেখতো তার বয়সের ছেলে মেয়েরা ব্যাগ কাধে স্কুলে যাচ্ছে। তখন তারও ভীষণ ইচ্ছে হত তাদের মত ব্যাগ কাধে নিয়ে স্কুলে যেতে।
স্কুলিং কার্যক্রম শুরু করার প্রথম দিন থেকেই উপস্থিত ছিলো রবিউল। সেই থেকেই রবিউলের যাত্রা আমাদের সাথে।
রবিউল এখন ৮ম শ্রেনিতে পড়ে, তার স্বপ্ন এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তবে হাতছানি দিচ্ছে। তার পড়াশোনার আগ্রহ দেখে, তার পড়াশোনা থাকা খাওয়াসহ সকল দায়িত্ব আমরা জুম বাংলাদেশ স্কুল থেকে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
এখন আর স্বপ্ন পূরণে কোনো বাধা নেই। এভাবেই বস্তির একটি ছিন্নমূল শিশু রাস্তা থেকে উঠে এসে সুন্দর একটি আগামীর স্বপ্ন দেখায় বিশ্বকে।